বিষয়সূচি
- পরিস্থিতি ও নির্দেশনা
- আপনার যা জানা উচিত
- যুদ্ধের সাইরেন কেমন শোনায়?
- যুদ্ধের সাইরেন কোথায় বসানো হয়?
- সাইরেন কত দূর পর্যন্ত শোনা যায়?
- ভারতে প্রথম কবে ‘যুদ্ধের সাইরেন’ বাজে?
- সাইরেন বাজলে কী করবেন?
- বাড়ি খালি করতে কতক্ষণ সময় পাওয়া যায়?
- হাইলাইটস
পেহেলগামে সাম্প্রতিক জঙ্গি হামলার পর ভারতের সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্ক নতুন করে উত্তেজনাপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এই প্রেক্ষাপটে উদ্ভূত সম্ভাব্য হুমকির মুখে ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আগামীকাল, ৭ মে ২০২৫ তারিখে, দেশজুড়ে ২৪৪টি জেলায় অসামরিক মহড়া (Civil Defence Mock Drill) আয়োজনের নির্দেশ দিয়েছে।বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এই মহড়া বুধবার রাত ৯টা থেকে শুরু হয়ে শুক্রবার ভোর ৩টা পর্যন্ত চলবে।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে, দেশের সব রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ‘সিভিল ডিফেন্স’ বা বেসামরিক প্রতিরক্ষা বিভাগ আগামী ৭ মে যুদ্ধ পরিস্থিতির প্রস্তুতির জন্য একটি মক ড্রিল পরিচালনা করবে।
এই মহড়ার মাধ্যমে সাধারণ নাগরিকদের শেখানো হবে—যদি হঠাৎ যুদ্ধ শুরু হয়, বিমান হানা বা বন্দুকধারীদের হামলার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়, তখন কী করণীয়। কীভাবে নিরাপদে আশ্রয় নিতে হবে, আলো নিভিয়ে ফেলতে হবে, বা প্রশাসনের নির্দেশ মেনে চলতে হবে—এইসব বিষয়েই সাধারণ মানুষকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য আয়োজন।
আপনার যা জানা উচিত
১৯৭১ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের পর এবারই প্রথম বার মক ড্রিল অনুষ্ঠিত হতে চলেছে। এমন পরিস্থিতিতে, এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ যে আপনি জানেন এই সাইরেন কী? কোথায় এটি ইনস্টল করা হবে? এটি কেমন শোনাবে এবং কতদূর পর্যন্ত শোনা যাবে? সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, যখন সাইরেন বাজবে, তখন মানুষের কী করা উচিত? এসব প্রশ্নের উত্তর এই লেখায় আপনি পাবেন।
যুদ্ধের সাইরেন কেমন শোনায়?
যুদ্ধের সাইরেন একটি উচ্চ শব্দের সতর্কীকরণ সিস্টেম। এটি যুদ্ধ, বিমান হামলা বা দুর্যোগের মতো জরুরি পরিস্থিতির জন্য ব্যবহৃত হয়। এর শব্দে একটানা উচ্চ-নিম্ন কম্পন থাকে, যা এটিকে সাধারণ হর্ন বা অ্যাম্বুলেন্সের শব্দ থেকে সম্পূর্ণ আলাদা করে তোলে। এটি মানুষের কাছে জরুরি সতর্কতা পৌঁছাতে সাহায্য করে।
যুদ্ধের সাইরেন কোথায় বসানো হয়?
সাইরেনগুলো সাধারণত প্রশাসনিক ভবন, পুলিশ সদর দফতর, ফায়ার স্টেশন, সেনাঘাঁটি ও জনবহুল এলাকায় উঁচু স্থানে বসানো হয়। লক্ষ্য একটাই— শব্দ যেন যতদূর সম্ভব পৌঁছায়। দিল্লি-নয়ডার মতো বড় শহরের সংবেদনশীল এলাকাগুলোতে এ ধরনের সাইরেন স্থাপন বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। প্রয়োজন অনুযায়ী ভবিষ্যতে দেশের অন্যান্য শহরেও এগুলি বসানো হতে পারে।
কেমন শোনায় যুদ্ধের সাইরেন, কত দূর পর্যন্ত পৌঁছায় এই শব্দ?
যুদ্ধের সময় বাজানো হয় বিশেষ ধরনের সাইরেন, যার শব্দ সাধারণ সাইরেনের চেয়ে অনেক বেশি জোরে ও ভীতিকর। এই সাইরেনের আওয়াজ একটানা নয় প্রথমে ধীরে ধীরে বাড়ে, এরপর কমে আসে, আবার বাড়ে। এমনভাবে কয়েক মিনিট ধরে চক্রাকারে বাজতে থাকে। এই শব্দ প্রায় ২ থেকে ৫ কিলোমিটার পর্যন্ত শোনা যায়। যেখানে অ্যাম্বুল্যান্স সাইরেনের শব্দ হয় ১১০-১২০ ডেসিবেল, সেখানে যুদ্ধের সাইরেনের আওয়াজ পৌঁছে যায় ১২০ থেকে ১৪০ ডেসিবেল পর্যন্ত।
ভারতে প্রথম কবে ‘যুদ্ধের সাইরেন’ বাজে?
ভারতে প্রথম যুদ্ধের সাইরেন বাজানো হয় ১৯৬২ সালের চীন যুদ্ধের সময়। এরপর ১৯৬৫ আর ১৯৭১ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধেও এই সাইরেন ব্যবহার করা হয়। তখন দিল্লি, মুম্বই, কলকাতা, অমৃতসরসহ বড় বড় শহরে এই সাইরেন বাজানো হয়েছিল। কার্গিল যুদ্ধের সময়ও সীমান্তে এই সাইরেন ব্যবহার হয়েছিল। সাধারণ মানুষকে আগেই সতর্ক করতে ও নিরাপদে সরিয়ে নিতে এই সাইরেন ব্যবহার করা হতো।
সাইরেন বাজলে কী করবেন?
যুদ্ধের সাইরেন বাজলে বুঝতে হবে কোনো বিপদ আসছে বা প্রস্তুতির সময় এসেছে। তখন সঙ্গে সঙ্গে নিরাপদ স্থানে সরে যেতে হবে। তবে যদি এটি মক ড্রিল, ভয় পাওয়ার কিছু নেই। এই সময়ে খোলা জায়গা থেকে দূরে থাকুন, কোনো বাড়ির ভিতরে আশ্রয় নিন। টিভি, রেডিও বা মোবাইলে সরকারি নির্দেশনার দিকে নজর রাখুন। কোনো ধরনের গুজবে কান দেবেন না এবং প্রশাসনের নির্দেশ মেনে চলুন।
বাড়ি খালি করতে কতক্ষণ সময় পাওয়া যায়?
যুদ্ধ বা বিপদের সময় প্রথম সাইরেন বাজার পর মাত্র ৫ থেকে ১০ মিনিটের মধ্যেই সবাইকে নিরাপদ জায়গায় পৌঁছে যেতে হয়। এই অল্প সময়ে দ্রুত এবং ঘাবড়ে না গিয়ে কীভাবে সরে যেতে হয়, তা শেখানোর জন্যই ‘মক ড্রিল’ বা মহড়া করা হয়।
হাইলাইটস
সাধারণ জনগণের প্রস্তুতির ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে—
- এয়ার রেড সাইরেন ব্যবস্থাকে অপারেশনাল করার নির্দেশ।
- আচমকা হামলা হলে কীভাবে আত্মরক্ষা করতে হবে তার জন্য সাধারণ মানুষ ও ছাত্রদের মক ড্রিল।
- যেকোনো মুহূর্তে ব্ল্যাক আউটের জন্য প্রস্তুত থাকার নির্দেশ।
- বিশেষ বিশেষ কারখানা এবং সংস্থাকে বাঁচাতে ক্যামোফ্লেজের প্রস্তুতি।
- হামলা হলে মুহূর্তের মধ্যে এলাকা খালি করার জন্য মক ড্রিলের নির্দেশ।