কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের মারাত্মক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াকে প্রথমবারের মতো স্বীকার করেছেন ভ্যাকসিন তৈরিকারক সংস্থা! ভ্যাকসিন দিলে দেখুন?
ব্রিটিশ ফার্মা কোম্পানি AstraZeneca প্রথমবারের মতো স্বীকার করেছে যে তার Covid-19 ভ্যাকসিনে মারাত্মক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে।
করোনা মহামারী যখন সারাবিশ্বে ছয়লাপ করে তখন ভ্যাকসিন এই ভরসা জুগিয়েছে বিশ্ববাসীকে। সেসময় একদল দাবি করেছিলেন ,ভ্যাকসিনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে।
তাদের দাবি সত্য করে দিয়েছে এবং এই কথা স্বীকার করে নিয়েছে সয়ং ব্রিটিশ ফার্মা কোম্পানি অ্যাস্ট্রাজেনেকা। আর করোনা ভ্যাকসিনে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে বলে স্বীকার করে নিয়েছে।
সম্প্রতি ব্রিটিশ সংবাদপত্র দ্য টেলিগ্রাফে প্রকাশিত নিউজে ,ব্রিটিশ ফার্মা কোম্পানি অ্যাস্ট্রাজেনেকা বলেছে, তাদের তৈরি করোনার ভ্যাকসিনের কারণে টিটিএসের(TTS )লক্ষণ দেখা যেতে পারে।
করোনা ভ্যাকসিনে টিটিএস , টিটিএস আসলে কি?
টিটিএসের সম্পূর্ণ নাম হলো ‘থ্রম্বোসিস উইথ থ্রম্বোসাইটোপেনিয়া সিনড্রোম’। অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনা ভ্যাকসিনের কারণে মানুষের শরীরে প্লাটিলেট কমে যায় এবং শরীরে রক্ত জমাট বাঁধার যে অবস্থাটি আলোচিত হয় তাকে বলা হয় টিটিএস।
টিটিএসের সাধারণ কিছু লক্ষণ এগুলো হলো:
মাথাব্যথা, পেটব্যথা, পা ফুলে যাওয়া, শ্বাস নিতে সমস্যা হওয়া এবং চিন্তায় ব্যাঘাত ঘটা। এসব লক্ষণ কারও মধ্যে থাকলে তাকে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। (সোর্স; দ্যা ইকোনমিক টাইমস)
অক্সফোর্ড ও অ্যাস্ট্রাজেনেকার সহযোগিতায় তৈরি হয় COVID -19 ভ্যাকসিন । এই ভ্যাকসিনের প্রক্রিয়াজাতকরনে যুক্ত ছিল ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট। এর নাম দেওয়া হয়েছিল AZD1222। এবং ভারতে, এটি কোভিশিল্ডের নামে লোকেদের কাছে পরিচালিত হয়েছিলো।
সম্প্রতি দ্যা ইকোনমিক টাইমস এক প্রতিবেদনে বলেছেন এ “ভারতে, কোভিশিল্ভ যেটি ভারতের 90% জনসংখ্যার টিকা দেওয়ার জন্য ব্যবহার করা হয়েছিলো তা ভাল কাজ ও করেছে।”
কোভিশিল্ডের পাশাপাশি ভারতে কোভ্যাকসিন দুটো তিনটে বুস্টার ড্রোসও নিয়েছে মানুষজন।ভারতের মধ্যে এই খবর ব্যাপকভাবে ছড়িয়েছে, এবং খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
ভারতেও মামলা শুরু করা যেতে পারে বলে অভিযোগ উঠেছে!
কোভিডের পরে, এই ধরনের মৃত্যুর সংখ্যা ভারতে ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছিলো, যার কারণ স্পষ্টভাবে জানা যায়নি। এগুলোর বেশিরভাগই কোনো না কোনো শারীরিক সমস্যার সঙ্গে যুক্ত ছিল এবং সরকার ও স্বাস্থ্য বিশ্ব কখনই বিশ্বাস করেনি যে কোভিড ভ্যাকসিনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কারণে এমনটা হতে পারে। এখন কোম্পানির এই স্বীকৃতির পরে, ভারতেও এক রাউন্ড মামলা শুরু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
চিকিৎসা বিশেষজ্ঞ ডাঃ রাজীব জয়দেবন বলেছেন যে বিরল ক্ষেত্রে, কিছু ভ্যাকসিন ব্যবহারের পরে, থ্রম্বোসিস থ্রম্বোসাইটোপেনিয়া সিন্ড্রোম (টিটিএস) নামক অবস্থা হতে পারে। ফার্মা কোম্পানি অ্যাস্ট্রাজেনেকা আদালতে স্বীকার করার পরে তার বিবৃতি আসে যে তাদের দ্বারা তৈরি কোভিড ভ্যাকসিন, কোভিশিল্ড এবং ভ্যাক্সজেভেরিয়া কিছু ক্ষেত্রে টিটিএস হতে পারে বলে স্বীকারোক্তি দিয়েছে।
2021 সাল থেকে ভারতে কোভিড ভ্যাকসিনের 220 কোটি ডোজ ব্যবহার করা হয়েছিল। এর মধ্যে 174 কোটি ডোজ বা 79% Covishield ছিল। দেশটি Covaxin-এর 36.3 কোটি ডোজ এবং Corbevax-এর 7.3 কোটি ডোজ ব্যবহার করেছে।
দ্য টেলিগ্রাফে সম্প্রতি প্রকাশিত, ব্রিটিশ ফার্মা কোম্পানি AstraZeneca বিবৃতিতে Covishield ভ্যাকসিন নিয়ে ভারতীয়দের মধ্যে উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেক ভারতীয় ডাক্তার বলেছেন যে ভ্যাকসিনটি COVID-19-এর মতো মহামারীর গুরুতর রূপ প্রতিরোধে এবং মহামারী চলাকালীন হাসপাতালে ভর্তি ও মৃত্যু কমাতে একটি বড় ভূমিকা পালন করেছে।