আইকনিক শিল্পপতি রতন টাটার মৃত্যুতে দেশজুড়ে শোকের ছায়া, মোদি-মমতার শোকবার্তা
প্রয়াত ভারতের আইকনিক শিল্পপতি রতন টাটা। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৬। বয়সজনিত কারণে মুম্বাইয়ের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি। সোমবার থেকে শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটতে থাকে এবং বুধবার রাতেই তিনি শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। ভারতের অন্যতম বড় শিল্পগোষ্ঠী টাটা সন্সের ইমেরিটাস চেয়ারম্যান রতন টাটার প্রয়াণের খবরে দেশজুড়ে শোকের ছায়ায় নেমে পড়ে।
সম্প্রতি কয়েকদিন আগে রতন টাটার মৃত্যুর ভুয়া খবর সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লেও তিনি নিজেই সেই খবর খারিজ করেই নিজেই এক্স একাউন্টে টুইট করে জানান। জানিয়েছিলেন যে তিনি কেবল রুটিন চেকআপের জন্য হাসপাতালে ছিলেন। তবে মাত্র দুদিনের মধ্যেই সেই খবর সত্যি হলো, এবং বুধবার রাতে তাঁর মৃত্যু হলো।
রতন টাটার প্রয়াণে সারা দেশের রত্ন ।রতন টাটার মৃত্যুতে শিল্পজগতে একধরনের শূন্যতা তৈরি হয়েছে। তাঁর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু, উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনকার, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিসহ বিশিষ্টজন।
শোকপ্রকাশ থেকে বাদ যায়নি বলিউড ও ক্রিয়া জগতের তারকা বিশিষ্টজনরা সলমন খান, প্রিয়াঙ্কা চোপড়ারা রোহিত শর্মা , মহম্মদ শামিসহ শোকপ্রকাশ করেছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শোকবার্তায় লেখেন, ‘টাটা সন্সের চেয়ারম্যান এমেরিটাস রতন টাটার আকস্মিক প্রয়াণের খবর পেয়ে শোকাহত। টাটা গোষ্ঠীর প্রাক্তন চেয়ারম্যান ছিলেন ভারতীয় শিল্পের একজন অগ্রণী নেতা এবং একজন জন-উৎসাহী জনহিতৈষী। তাঁর মৃত্যু ভারতীয় ব্যবসায়িক জগৎ ও সমাজের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি। তার পরিবারের সকল সদস্য ও সহকর্মীদের প্রতি আমার সমবেদনা রইল।’
রতন টাটার জন্ম ২৮ সেপ্টেম্বর ১৯৩৭ সালে। একজন শিল্পপতি হিসেবে বিশ্বজুড়ে পরিচিত হলেও তিনি অনেক মানুষের জীবনে সরাসরি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন, যা তাঁকে এক অনন্য ব্যক্তিত্ব হিসেবে ইতিহাসের পাতায় চিরস্মরণীয় রাখবে।বুদ্ধিমত্তা, মনন,সততা সবেতেই মানুষের মন জয় করেছেন তিনি। নতুন নতুন শিল্পকর্মের মাধ্যমে দেশের বুকে তৈরি করেছেন বহু কর্মসংস্থান , নতুনদের স্বপ্ন দেখিয়েছেন, বেকারের পেটে ভাত জুগিয়েছেন। সারাজীবনের আয়ের ৬০ থেকে ৬৫ শতাংশ জনকল্যাণে দান করে গেছেন তিনি।সর্বোপরি টাটা গোষ্ঠীর বট গাছ ছিলেন তিনি। টাটা গোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন রতনের প্রপিতামহ। এই গোষ্ঠীর বয়স একশোরও বেশি।
রতন টাটা উত্তরাধিকার সূত্রে টাটা গ্রুপের দায়িত্ব পান এবং জীবনের শেষ পর্যন্ত তিনি মন দিয়ে এই গোষ্ঠীকে আগলে রাখেন। তাঁর মৃত্যুর পর যেনো টাটা গ্রুপ অভিভাবকহীন হয়ে গেছে। অনেকেই তাঁর চলে যাওয়া মানতে পারছেন না। উৎসবের মাঝে এই মৃত্যু সংবাদ যেন এক ধরনের নীরবতা এনে দিয়ে রাজ্য তথা দেশে, ঝাড়খন্ডে মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন একদিনের রাস্ট্রিয় শোকের ঘোষণা করেন । বুধবার রাতে মুম্বাইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতাল থেকে তাঁর মৃতদেহ কোলাবায় নিজের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়।