অবশেষে ঘটতে চলেছে গাজায় দীর্ঘ দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের অবসান। বৃহস্পতিবার নিজের মালিকানাধীন সামাজিক মাধ্যম ট্রুথে এক পোস্টে তিনি জানান যে, গাজায় যুদ্ধবিরতি শান্তি পরিকল্পনার ‘প্রথম দফায়’ রাজি হয়েছে ইসরায়েল ও হামাস বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
এছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট আরও সামাজিক মাধ্যমে লেখেন,
‘খুব শিগগির সব জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হবে। সেই সঙ্গে ইসরায়েল নিজেদের সেনাদের নির্ধারণ করা একটি সীমানায় সরিয়ে আনবে। এবং এটি শক্তিশালী, টেকসই ও স্থায়ী শান্তির পথে প্রথম পদক্ষেপ।”
ইতিমধ্যেই দুবছরের সংঘাতের অবসান ঘটাতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গাজা পরিস্থিতি নিয়ে ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনা উপস্থাপন করলে।
আজ ( ৯ অক্টোবর ) এই পরিকল্পনার প্রথম ধাপের বাস্তবায়নে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাস একমত হয়েছে।
তাহলে কী ডোনাল্ড ট্রাম্প নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য ঐসব করছে বিশ্ব রাজনীতি চর্চা কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে ইসরাইল ও হামাসের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব। যদি ট্রাম্পের এই পুরো ঘটনাটাকে ট্রাম্পের নোবেল শান্তি পাওয়ার একটা চাল বলে জানান ব্রিটিশ বিশ্বখ্যাত সাংবাদিক মেহদী হাসান।
এদিকে কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গাজা যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপে চুক্তিতে পৌঁছেছে হামাস ও ইসরায়েল।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (X) এক পোস্টে মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাজেদ আল-আনসারি বলেন,
“মধ্যস্থতাকারীরা জানিয়েছেন, গাজা যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপের সব নিয়ম ও বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে দুই পক্ষ একমত হয়েছে। এর ফলে যুদ্ধ শেষ হবে। ইসরায়েলি জিম্মিরা দেশে ফিরবে, ফিলিস্তিনি বন্দীরা মুক্তি পাবে এবং গাজায় খাবার ও সাহায্য পৌঁছাবে।”
এদিনের আলোচনায় যোগ দেন যুক্তরাষ্ট্র ও মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকজন প্রভাবশালী মধ্যস্থতাকারী। তাঁদের মধ্যে ছিলেন মার্কিন দূত স্টিভ উইটকফ, ট্রাম্পের জামাতা জ্যারেড কুশনার, কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুর রহমান আল থানি এবং তুরস্কের গোয়েন্দাপ্রধান ইব্রাহিম কালিন।
বিবিসির সহযোগী সিবিএসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শান্তি প্রতিষ্ঠায় ভূমিকার জন্য হামাস কাতার, মিশর, তুরস্ক ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানিয়েছে। একই সঙ্গে তারা আহ্বান জানিয়েছে, ইসরায়েল যেন চুক্তির সব শর্ত ঠিকভাবে মেনে চলে। এছাড়াও হামাস এক বিবৃতিতে জানায় তারা ফিলিস্তিনের পুরোপুরি স্বাধীনতা অর্জন না করা পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাবেন।
অপরদিকে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই চুক্তি নিয়ে প্রতিক্রিয়ায় বলেন,
“আজ ইসরায়েলের জন্য একটি মহান দিন। এই চুক্তির ফলে জিম্মিরা অবশেষে তাদের পরিবারের কাছে ফিরে যেতে পারবে।”
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় চলমান হামলা চলছে। ট্রাম্পের হামাস ও ইসরাইলের মধ্যস্থতার মধ্যে প্রাণহানির ঘটনায় গাজায় মোট মৃতের সংখ্যা দুই বছরের মধ্যে প্রায় ৬৬ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। যারমধ্যে শিশু ও মহিলা মৃত্যুর সংখ্যা ২০ হাজারের মতো। এবং অবরোধের কারণে খাদ্য সংকট তীব্র, বাসিন্দাদের অনাহার-অর্ধাহারে দিন কাটছে। আন্তর্জাতিক মহল ইসরায়েলের এই সামরিক পদক্ষেপের সমালোচনা করলেও ফলস্বরূপ কিছু হয়ে উঠেনি, গাজা- ফিলিস্তিনের পরিস্থিতি দিন দিন আরও জটিল হয়ে উঠছে। অবশেষে ঘটতে চলেছে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের অবসান।