ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান উত্তেজনার আবহে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সম্প্রতি ইরানের বেশ কয়েকটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে।মার্কিন বিমান হামলার পাল্টা প্রতিক্রিয়া হিসেবে হরমুজ প্রণালী বন্ধের প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে ইরানের সংসদ।রোববার ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম প্রেস টিভির বরাতে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, পার্লামেন্টের সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, দেশের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা সংস্থাকে এখন এ সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করতে হবে।
ইরান ও ওমানের মাঝখানে অবস্থিত এই সংকীর্ণ জলপথ দিয়ে প্রতিদিন প্রায় দুই কোটি ব্যারেল তেল পরিবহণ হয় যা বিশ্বজুড়ে প্রায় এক-চতুর্থাংশ তেল বাণিজ্যের কেন্দ্রবিন্দু, বিশ্ব বাণিজ্যের এক গুরুত্বপূর্ণ রুট হলো এই হরমুজ প্রণালী। একে বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ “চোকপয়েন্ট” বা রাস্তার সন্ধিক্ষেত্র বলা হয় যা নিয়ন্ত্রণ করে থাকে ইরান।এই প্রণালী বিশ্বজুড়ে জ্বালানি পরিবহনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জলপথ হিসেবে পরিচিত।এটি বন্ধ হলে তেল পরিবহণের জন্য আর বিশেষ কোনো বিকল্প পথ খোলা থাকবে না।
ইরানের হরমুজ প্রণালী বন্ধের সিদ্ধান্তকে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ‘অর্থনৈতিক আত্মহত্যা’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, প্রণালী বন্ধ করা হলে যুক্তরাষ্ট্র ও মিত্ররা কড়া সামরিক জবাব দেবে।
রুবিও চীনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, তেহরানকে প্রভাবিত করে এই সিদ্ধান্ত রোধ করতে। এই জলপথ দিয়ে বিশ্বের ২০% তেল পরিবহন হয়, যা চীন ও ভারতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
মার্কিন জ্বালানি তথ্য প্রশাসনের মতে, ২০২৪ সালে বিশ্বব্যাপী মোট তেলের প্রায় ২০ শতাংশ হরমুজ প্রণালির মধ্য দিয়ে রপ্তানি হয়েছিল। হরমুজ প্রণালী বন্ধ হয়ে গেলে প্রথম সপ্তাহেই তেলের দাম ৮০ শতাংশ বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, কারণ বিকল্প রুটগুলোতে প্রচুর খরচ হবে।
এদিকে প্রভাব পড়তে শুরু করেছে বাজারে। আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম বাড়তে শুরু করেছে।
হরমুজ প্রণালী বন্ধ হলেও ভারতের তেল জোগানে সমস্যা হবে না বলে নিজস্ব এক্স হ্যান্ডেলে জানালেন কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী হরদীপ সিং পুরী। তিনি আরও জানান, গত কয়েক বছরে ভারতের তেল আমদানির উৎস বহুমুখী হয়েছে, এবং এখন আমাদের অনেক তেলই হরমুজ প্রণালী দিয়ে আসে না। পরিস্থিতির ওপর ২ সপ্তাহ ধরে নজর রাখছে ভারত দেশবাসীকে চিন্তামুক্ত থাকতে বলেছেন।