Iran Closing Hormuz: ইরানের হুমকিতে তীব্র উত্তেজনা, ইরান কি হরমুজ প্রণালী বন্ধ করবে? হরমুজ প্রণালী বন্ধ হলে ভারতের সামনে বড় বিপদ!

Ealiash Rahaman
WhatsApp_Group
সব খবর মোবাইলে পেতে Whatsapp গ্রুপে জয়েন্ট করুন

ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান উত্তেজনার আবহে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সম্প্রতি ইরানের বেশ কয়েকটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে। এই ঘটনার সরাসরি প্রভাব পড়তে চলছে আন্তর্জাতিক বাজারে। বিশেষ করে ভারত সহ ভারতীয় উপমহাদেশের বেশ কয়েকটি দেশে ব্যাপক প্রভাব পড়তে পারে।এমন পরিস্থিতিতে, এই মুহূর্তে দুই দেশের মধ্যে এই যুদ্ধ থামার কোনও আশা নেই। তেলের দাম বৃদ্ধি ভারত সহ সমগ্র বিশ্বের জন্য একটি সংকট তৈরি করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

Join WhatsApp Channel Join Now
Telegram Group Join Now

বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম গত তিন বছরের মধ্যে একদিনে সর্বোচ্চ হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। তার‌ই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে প্রাকৃতিক গ্যাসের দামও।

ইরান বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অপরিশোধিত তেল উৎপাদক এবং দ্বিতীয় শীর্ষ প্রাকৃতিক গ্যাসের ভাণ্ডারের অধিকারী দেশ। ফলে ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধ যতটা দীর্ঘ হবে তার সরাসরি পড়বে ভারতীয় উপমহাদেশে।

বিশেষ করে ভারতে জ্বালানি আমদানির খরচ বাড়বে, মূল্যস্ফীতি ও বৈদেশিক মুদ্রার ঘাটতিও বাড়তে পারে।

বিশেষ করে ঝুঁকিতে রয়েছে হরমুজ প্রণালী। ইরান ও ওমানের মাঝখানে অবস্থিত এই সংকীর্ণ জলপথ দিয়ে প্রতিদিন প্রায় দুই কোটি ব্যারেল তেল পরিবহণ হয় যা বিশ্বজুড়ে প্রায় এক-চতুর্থাংশ তেল বাণিজ্যের কেন্দ্রবিন্দু, বিশ্ব বাণিজ্যের এক গুরুত্বপূর্ণ রুট হলো এই হরমুজ প্রণালী। একে বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ “চোকপয়েন্ট” বা রাস্তার সন্ধিক্ষেত্র বলা হয় যা নিয়ন্ত্রণ করে থাকে ইরান। ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধ দীর্ঘ মেয়াদে হলে বন্ধ হয়ে যেতে পারে হরমুজ প্রণালী। ইরান ইতোমধ্যেই হরমুজ প্রণালী বন্ধের হুমকিও দিয়েছে। ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধে এবার সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রও জড়িয়েছে। ফলে হরমুজ প্রণালী ঘিরে টানটান উত্তেজনা তৈরি হয়েছে বিশ্ব মহলে।

 ভারতের জন্য হরমুজ প্রণালী কেন গুরুত্বপূর্ণ ও ক্ষতি কী কী হবে?

১. ভারতের মোট আমদানিকৃত তেলের ৮০% আসে হরমুজ প্রণালীর পথ ধরেই বিশেষ করে সৌদি আরব, ইরান, কুয়েত, সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে। প্রণালী বন্ধ হলে তেল সরবরাহ ব্যহত হবে জ্বালানির দাম হঠাৎ বেড়ে যাবে।

২. তেল-গ্যাসের দাম বাড়লে তার প্রভাব পড়বে পরিবহন, শিল্প, বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং কৃষিক্ষেত্রে।

এর ফলে জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাবে, সাধারণ মানুষ আরও ভোগান্তিতে পড়বে। যুদ্ধের ছায়া পড়েছে বাণিজ্যে। ভারত ও ইরানের মধ্যে বছরে ২ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য হয়, পাকিস্তানের সঙ্গেও ইরানের বাণিজ্য প্রায় একই। যুদ্ধ দীর্ঘ হলে এই আদান-প্রদান কমে যাবে।

ভারতীয় কোম্পানিগুলোও ঝুঁকিতে, বিশেষ করে যেগুলো ইসরায়েলে ব্যবসা করছে যেমন টিসিএস, আদানি, ইনফোসিস। যুদ্ধ চলতে থাকলে এই প্রতিষ্ঠানগুলো বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে, কেউ কেউ হয়তো ব্যবসা গুটিয়ে নিতেও বাধ্য হবে বলে অনেকে মনে করছেন।

সামগ্রিকভাবে বলা যায়, এই যুদ্ধের ফলে ভারতের জন্য কেবল কূটনৈতিক নয় অর্থনৈতিক চাপের মুখে পড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ইরান অতীতেও হরমুজ প্রণালী বন্ধের হুমকি দিয়েছে, যদি পশ্চিমা চাপ বাড়ে তবে এই প্রণালী বন্ধ করে দেবে। রয়টার্স সূত্র মারফত, ইরানের একজন আইনপ্রণেতা ইয়াজদিখাহ জানিয়েছেন, এখনো তারা তা করেনি কারণ এই রুটটি শুধু ইরানের নয়, বরং গোটা উপসাগরীয় অঞ্চল ও বিশ্বের বহু দেশের জন্যই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

এই পরিস্থিতিতে ট্যাঙ্কার মালিকরা এবং জাহাজ কোম্পানিগুলো নিরাপত্তা নিশ্চিত করে হরমুজ প্রণালী এড়িয়ে চলতে শুরু করেছে, যার ফলে জ্বালানি সরবরাহ ও ভাড়া উভয় ক্ষেত্রেই চাপ বাড়বে।

ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধ শুরু হতেই ভারতের পক্ষে কূটনৈতিক ভারসাম্য রক্ষা করা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ, ভারত ইসরায়েল ও ইরান দুই দেশের সঙ্গেই ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রাখে।

যুদ্ধ শুরুর পর মোদি ফোনে কথা বলেছেন নেতানিয়াহুর সঙ্গে, আর পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্কর কথা বলেছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে। ভারতের দুই দেশের মধ্যকার কূটনৈতিক সম্পর্ক বজায় রেখে চলতেছে,।

তবে কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বলেন , ভারত ‘নীরব সমর্থনের’ মাধ্যমে ইসরায়েলকে উৎসাহ দিচ্ছে, যা মানবাধিকারের লঙ্ঘন।

Related News