প্রকাশিত হয়েছে খসড়া ভোটার তালিকা। তবে খসড়া ভোটার লিস্টে নাম উঠলেই যে সব চিন্তার শেষ, তা কিন্তু নয়। খসড়া ভোটার তালিকায় নাম থাকলেও অনেক ভোটারকে হেয়ারিং বা ডকুমেন্টস ভেরিফিকেশনের জন্য ডাকা হতে পারে।
ভোটার তালিকা প্রকাশের পর এবার কমিশন শুরু করতে চলেছে আসল ঝাড়াইবাছাইয়ের কাজ। তাহলে চলুন দেখে নেওয়া যাক – কোন সকল ভোটারকে ডকুমেন্টস ভেরিফিকেশনের জন্য ডাকা হতে পারে এবং কোন কোন ক্ষেত্রে হেয়ারিং হবে।
মঙ্গলবার (১৬ই ডিসেম্বর) পশ্চিমবঙ্গে খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশিত হয়েছে। ওই তালিকায় ASD অর্থাৎ অনুপস্থিত (Absent), স্থানান্তরিত ভোটার (Shifted) ও মৃত ভোটার (Death Voter) ছাড়া প্রায় সকল ভোটারের নাম অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এছাড়া, যারা এনুমারেশন ফর্ম অর্থাৎ গণনা ফর্ম পূরণ করে জমা দিয়েছেন, তাদের নামও খসড়া ভোটার তালিকায় রয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গে ভোটার এসআইআর শুরু হওয়ার আগে ভোটারের মোট সংখ্যা ছিল ৭ কোটি ৬৬ লক্ষ ৩৭ হাজার ৫২৯ জন। তবে মঙ্গলবার প্রকাশিত খসড়া ভোটার তালিকায় নাম রয়েছে ৭ কোটি ৮ লক্ষ ১৬ হাজার ৬৩১ জনের। খসড়া ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত সকল ভোটারই যে বৈধ ভোটার, সে বিষয়ে এখনও পুরোপুরি নিশ্চিত নয় নির্বাচন কমিশন।
যেসকল ভোটারদের শুনানির মুখোমুখি হতেই হবে (বাধ্যতামূলক), দেখে নিন—
পশ্চিমবঙ্গে শেষবার ভোটার এসআইআর (Voter SIR) হয়েছিল ২০০২ সালে। দীর্ঘ সময় বন্ধ থাকার পর চলতি বছর, অর্থাৎ ২০২৫ সালে ফের রাজ্যে ভোটার এসআইআর শুরু হয়েছে। এসআইআর শুরু হওয়ার পর নির্বাচন কমিশন বুথ লেভেল অফিসারদের (BLO) মাধ্যমে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার এনুমারেশন ফর্ম, অর্থাৎ গণনা ফর্ম বিলি করে।
গণনা ফর্ম পূরণ করার সময় ভোটারদের বর্তমান তথ্যের পাশাপাশি ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় থাকা নিজের নামের তথ্য উল্লেখ করতে হয়েছে। যদি নিজের নাম না থাকে, সেক্ষেত্রে বাবা, মা, ঠাকুরদা অথবা ঠাকুরমার ২০০২ সালের শেষ ভোটার এসআইআর – এর তথ্য দিতে হয়েছে।
তবে নির্বাচন কমিশনের প্রাথমিক যাচাইয়ে দেখা গেছে, প্রায় ৩০ লক্ষ ৫৯ হাজারের বেশি ভোটারের ক্ষেত্রে ২০০২ সালের ভোটার তালিকার সঙ্গে বর্তমান তথ্যের কোনও যোগসূত্র বা ‘ম্যাপিং’ করা যায়নি। এই সকল ভোটারকেই বাধ্যতামূলকভাবে শুনানির জন্য ডাকা হবে।
যদি আপনার বা আপনার পরিবারের কোনও সদস্যের নাম ২০০২ সালের শেষ ভোটার এসআইআর তালিকায় না থাকে, তাহলে নির্ধারিত দিনে হাজির হয়ে উপযুক্ত নথি নির্বাচন কমিশনের কাছে পেশ করতে হবে।
২০০২ সালের ভোটার তালিকায় নাম রয়েছে এবং মঙ্গলবার প্রকাশিত খসড়া ভোটার তালিকাতেও নাম রয়েছে—এমন প্রায় ১ কোটি ৩৬ লক্ষ ভোটারকেও হেয়ারিংয়ের জন্য ডাকা হতে পারে।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, এই সকল ভোটারের এসআইআর গণনা ফর্মে উল্লেখিত তথ্যে একাধিক ক্ষেত্রে অসঙ্গতি বা সন্দেহ দেখা দিয়েছে। যেমন— কোথাও ভোটারের বয়সের তুলনায় বাবা বা মা মাত্র ১৫ বছরের বেশি বড়, আবার কোথাও বাবা-মায়ের সঙ্গে বয়সের ব্যবধান ৫০ বছরেরও বেশি। আবার কিছু ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, ভোটার তাঁর ঠাকুরদা বা ঠাকুরমার তুলনায় ৪০ বছরের বেশি ছোট নন—এমন নানা ধরনের অসঙ্গতি ধরা পড়েছে।
এই ধরনের ভোটারদের ক্ষেত্রে প্রথম পর্যায়ে বুথ লেভেল অফিসার (BLO) দ্বারা তথ্য যাচাই করা হবে। BLO সন্তুষ্ট না হলে সংশ্লিষ্ট ভোটারদের নথি ভেরিফিকেশনের জন্য নির্বাচন কমিশনের হেয়ারিংয়ে ডাকা হবে।
এদিকে, জানিয়ে রাখা ভালো যে খসড়া ভোটার তালিকা থেকে মৃত, স্থানান্তরিত, নিখোঁজ এবং একাধিক জায়গায় নাম থাকা ভোটারদের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। এই বাদ পড়া ভোটারের মোট সংখ্যা ৫৮ লক্ষ ২০ হাজার ৮৯৮ জন।
খসড়া ভোটার লিস্টে নাম রয়েছে কিনা দেখুন PDF লিস্ট Download করে, এখানে ক্লিক করে 👇


