স্কুল সার্ভিস কমিশনের শিক্ষক নিয়োগে এল নতুন বিধি। ২৯ মে মধ্যরাতে প্রকাশিত গেজেট বিজ্ঞপ্তিতে শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা ও ক্লাস নেওয়ার দক্ষতাকে গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
এছাড়াও পরীক্ষার নম্বর বিভাজন ও OMR শিট সংরক্ষণেও পরিবর্তন এসেছে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে ২০১৬ সালের চাকরিহারা প্যানেলভুক্তদের জন্য বিশেষ বয়সের ছাড় দেওয়া হয়েছে।
স্কুল সার্ভিস কমিশনে গেজেট বিজ্ঞপ্তিতে নিয়োগের দেখেনিন বড়সড় পরিবর্তন-
১. নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় জোর দেওয়া হয়েছে শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা ও ক্লাস নেওয়ার দক্ষতার উপরে। এই দুই ক্ষেত্রেই প্রার্থীরা পাবেন সর্বোচ্চ ২০ নম্বর যার মধ্যে ১০ নম্বর পূর্ব শিক্ষকতার অভিজ্ঞতার জন্য এবং বাকি ১০ নম্বর ‘লেকচার ডেমোস্ট্রেশন’ এর জন্য। আগে এই দুটি বিষয়কে নম্বর দেওয়ার মধ্যে আনা হয়নি। এবারই প্রথম যোগ করা হল।
২. এ ছাড়া পরিবর্তন হয়েছে পরীক্ষার নম্বর বণ্টনেও। লিখিত পরীক্ষা আগে যেখানে ৫৫ নম্বরের হত, এখন তা বাড়িয়ে করা হয়েছে ৬০ নম্বর। তবে শিক্ষাগত যোগ্যতার ভিত্তিতে নম্বর বরাদ্দ কমিয়ে ৩৫ থেকে ১০ নম্বর করা হয়েছে। ইন্টারভিউয়ের ক্ষেত্রে নম্বর আগের মতোই ১০ রাখা হয়েছে।
৩. প্রার্থীদের বয়সসীমাও নির্ধারণ করা হয়েছে নতুনভাবে। ২০২৫ সালের ১ জানুয়ারি অনুযায়ী সর্বোচ্চ ৪০ বছর বয়স পর্যন্ত প্রার্থীরা আবেদন করতে পারবেন। তফসিলি জাতি, জনজাতি এবং অনগ্রসর শ্রেণির প্রার্থীরা বয়সের ঊর্ধ্বসীমায় সরকারি নিয়ম অনুযায়ী ছাড় পাবেন।
নতুন বিধিতে আরও বলা হয়েছে, প্রথম কাউন্সেলিংয়ের পর প্যানেল এবং ওয়েটিং লিস্টের মেয়াদ থাকবে এক বছর পর্যন্ত। তবে কমিশন চাইলে রাজ্য সরকারের অনুমতি নিয়ে তা আরও ছ’মাস পর্যন্ত বাড়াতে পারবে।
৪. ওএমআর শিট সংরক্ষণের নিয়মেও এসেছে পরিবর্তন লিখিত পরীক্ষার ওএমআর শিট দুই বছর পর্যন্ত রাখতে হবে এবং স্ক্যান কপি ১০ বছর পর্যন্ত সংরক্ষিত রাখতে হবে।
উচ্চ প্রাথমিক স্তরের নিয়োগ প্রক্রিয়াতেও পরিবর্তন এসেছে কিছুটা-
ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষক পদে টেট পাশ করাই থাকছে বাধ্যতামূলক। টেট নম্বরকে সর্বোচ্চ ৪০, লিখিত পরীক্ষাকে ২৫ এবং ইন্টারভিউকে ১৫ নম্বরের মধ্যে মূল্যায়ন করা হবে।
সব মিলিয়ে, একদিকে যেমন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা আনতে চেয়েছে সরকার, তেমনই ২০১৬ সালের চাকরিহারা প্রার্থীদের জন্যও রাখা হয়েছে বিশেষ সুবিধা বয়সের ছাড় এবং অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে বাড়তি নম্বরের সুযোগ। তবে এসব পরিবর্তন আন্দোলনকারী প্রার্থীদের মন ভরাতে পারবে কি না, তা সময়ই বলবে।
-হাইলাইটস-
যে কোনো ব্যক্তি যদি আদালতে দোষী সাব্যস্ত হন, তাহলে সেই ব্যক্তি নিয়োগের জন্য যোগ্য হবেন না।
WBSSC-র শিক্ষক কবে নিয়োগ কী যোগ্যতা থাকলে আবেদন করতে পারবেন?একজনের দেখে নিন পরীক্ষার সময়সূচিও :
আবেদন শুরু: ১৬ জুন ২০২৫
আবেদন শেষ: ১৪ জুলাই ২০২৫
লিখিত পরীক্ষা: সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহ
ইন্টারভিউ ও প্যানেল: নভেম্বরের মধ্যে।
আবেদন ফি:
সাধারণ ও ওবিসি প্রার্থীদের জন্য: ৫০০ টাকা
এসসি, এসটি ও শারীরিকভাবে অক্ষমদের জন্য: ২০০ টাকা।
মাধ্যমিক (ক্লাস ৯-১০)-এর জন্য: আবশ্যক স্নাতক বা স্নাতকোত্তর ডিগ্রি (কমপক্ষে ৫০% ) এবং B.Ed অথবা চার বছরের BA.Ed/B.Sc.Ed।
উচ্চমাধ্যমিক (ক্লাস ১১-১২)-এর জন্য: প্রয়োজন স্নাতকোত্তরে ৫০% নম্বর ও সঙ্গে B.Ed অথবা BA.Ed/B.Sc.Ed। সেই সঙ্গে প্রাসঙ্গিক বিষয়ে মাস্টার্স পাশ বাধ্যতামূলক।
SC/ST/OBC/PH প্রার্থীদের জন্য শিক্ষাগত নম্বরে ৫% ছাড় থাকবে।
বয়সসীমা (১ জানুয়ারি, ২০২৫ অনুযায়ী): সর্বনিম্ন ২১ এবং সর্বাধিক ৪০ বছর। সংরক্ষিত শ্রেণির জন্য সরকারি নিয়ম অনুযায়ী অতিরিক্ত ছাড় থাকবে (SC/ST- ৫ বছর, OBC- ৩ বছর, PH- ৮ বছর পর্যন্ত)।
শুধুমাত্র ভারতীয় নাগরিকরাই আবেদন করতে পারবেন। পুরুষ প্রার্থীরা কন্যা বিদ্যালয়ে নিয়োগের জন্য যোগ্য হবেন না। প্রার্থীকে মাধ্যমিক/উচ্চমাধ্যমিক/স্নাতক বা স্নাতকোত্তরে বাংলা, ইংরেজি, হিন্দি, নেপালি, উর্দু বা প্রযোজ্য শিক্ষার মাধ্যমে উত্তীর্ণ হতে হবে।