খসড়া ভোটার লিস্ট প্রকাশের পর এবার শুনানির জন্য নোটিশ পাঠাতে চলেছে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন কমিশনের তরফে আগেই জানানো হয়েছে, ২০০২ সালের শেষ এসআইআর (Special Intensive Revision) অনুযায়ীই চলতি বছরের এসআইআর-এর কাজ সম্পন্ন হয়েছে। কমিশন ২০০২ সালের ভোটার তালিকার সঙ্গে ২০২৫ সালের ভোটার লিস্ট ম্যাপিং করে দেখতে পেয়েছে, মোট ৩০ লক্ষ ৫৯ হাজার ২৭৩ জন ভোটারের সঙ্গে কোনো যোগসূত্র পাওয়া যায়নি।
অর্থাৎ, ২০২৫ সালের ভোটার তালিকায় যাদের নাম রয়েছে, তাদের নাম বা পরিবারের কোনো সদস্যের নাম ২০০২ সালের ভোটার লিস্টে নেই। এই শ্রেণির ভোটারদের ক্ষেত্রেই যাচাই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে শুনানির নোটিশ পাঠাবে নির্বাচন কমিশন। এই সকল ভোটারের বাড়িতে সরাসরি নোটিশ পৌঁছে দেওয়া হবে, যাতে তারা প্রয়োজনীয় নথি সহ শুনানিতে উপস্থিত থাকতে পারেন।
মঙ্গলবার বুথভিত্তিক PDF আকারে খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন। ভোটাররা অনলাইনে ভোটার সার্ভিস পোর্টাল ও পশ্চিমবঙ্গ মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকে নিজেদের নাম রয়েছে কিনা তা যাচাই করতে পারবেন। একই সঙ্গে, সেই পোর্টাল থেকে অনলাইনে নিজের বুথের অন্তর্গত সকল ভোটারের নামসহ খসড়া ভোটার লিস্টের PDF ডাউনলোড করে দেখা যাবে।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, ২০০২ সালের ভোটার লিস্টে নাম না থাকলেও, শুধুমাত্র
- মৃত ভোটার
- স্থানান্তরিত ভোটার
- একজন ব্যক্তির একাধিক ভোটার কার্ড থাকলে
- যারা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে গণনা ফর্ম জমা দেননি
এই শ্রেণির ভোটারদের বাদ দিয়ে বাকি সকল ভোটারের নাম খসড়া ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, খসড়া ভোটার তালিকায় নাম থাকা প্রায় ১ কোটি ৩৬ লক্ষ ভোটারের নাম ২০০২ সালের ভোটার লিস্টেও রয়েছে। তবে কমিশনের দাবি, এই ভোটারদের এসআইআর গণনা ফর্মে পাওয়া তথ্য পর্যালোচনা করে কিছু ক্ষেত্রে অসঙ্গতি বা সন্দেহজনক তথ্য লক্ষ্য করা গেছে। সেই কারণে প্রথম ধাপে বুথ লেভেল অফিসার (BLO)-দের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট ভোটারদের তথ্য যাচাই করা হবে। BLO-দের যাচাইয়ের পরও যে সকল ভোটারদের ক্ষেত্রে কমিশনের সন্দেহ দূর হবে না, কেবলমাত্র তাঁদেরই শুনানির জন্য ডাকা হবে।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে আরও জানানো হয়েছে, শুনানির নোটিশ দেওয়ার পর ভোটারদের সাত দিনের সময় দেওয়া হবে। কোথায় ও কবে শুনানি হবে, সেই সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য নোটিশেই স্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকবে।
কি কি নথি দেখাতে হবে ২০০২ সালের ভোটার লিস্টে নাম না থাকলে –
১) যেকোনো পরিচয়পত্র / পেনশন পেমেন্ট অর্ডার যেটি কেন্দ্রীয় সরকার/ রাজ্য সরকার/ রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার যেকোনো নিয়মিত কর্মী/ পেনশনপ্রাপককে দেওয়া হয়েছে।
২) যে কোনো পরিচয়পত্র/ শংসাপত্র/ নথি যেটি 01/07/1987 এই তারিখের পূর্বে সরকার/ স্থানীয় কর্তৃপক্ষ/ব্যাংক/ ডাকঘর/ ভারতীয় জীবনবিমা নিগম/ রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা কর্তৃক প্রদত্ত।
৩) উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রদত্ত জন্মের শংসাপত্র।
৪) পাসপোর্ট
৫) স্বীকৃত পর্ষদ/ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক প্রদত্ত মাধ্যমিক/ শিক্ষাগত যোগ্যতার শংসাপত্র।
৬) রাজ্যের উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রদত্ত স্থায়ী বাসস্থানের শংসাপত্র।
৭) বনভূমি অধিকার শংসাপত্র।
৮) নাগরিকদের জাতীয় রেজিস্টার (যে সমস্ত ক্ষেত্রে এটা রয়েছে)।
৯) উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অন্যান্য অনগ্রসর সম্প্রদায়/ তপশিলি জাতি/ তপশিলি উপজাতি বা অন্য অনগ্রসর জাতির শংসাপত্র।
১০) রাজ্য/স্থানীয় কর্তৃপক্ষের দ্বারা তৈরি পারিবারিক রেজিস্টার।
১১) সরকারের কাছে থেকে পাওয়া জমি/ বাড়ি বরাদ্দের সরকারি শংসাপত্র।
১২) আধারের জন্য কমিশনের 09/09/2025 তারিখের নির্দেশ নং 23/2025-ERS/Vol.।। প্রযোজ্য হবে।
১৩) 01/07/2025 অনুযায়ী বিহারের এস.আই.আর-এর নির্বাচক তালিকার নির্যাস।

